একের পর এক মিথ্যা ও বিভ্রান্তকর সংবাদ প্রচার করেই যাচ্ছে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো। এবার দিনাজপুরের খানসামায় পারিবারিক কলহের জেরে মা ও মেয়ের গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার ঘটনাকে মিথ্যাভাবে প্রচারিত করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম টিভি নাইন বাংলা। যেখানে বলা হয়েছে, ধর্মান্তরিত হওয়ার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সনাতন ধর্মাবলম্বীর ওই মা ও তার শিশুকন্যাকে মেরে ঝুলিয়ে রেখেছে কট্টরপন্থীরা।
এদিকে, পারিবারিক কলহের জেরে আত্মহত্যার ঘটনাকে সাম্প্রদায়িকতার দিকে প্রবাহিত করার মত সংবাদ প্রচার করাকে প্রত্যাখ্যান করেছে খোদ পরিবার। আর এটি উদ্দেশ্য প্রণোদিত হতে পারে বলে মনে করছেন জনপ্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ।
গত ১৮ ডিসেম্বর রাতে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার আরাজি জুগিরঘোপা বেণুপাড়া এলাকায় নিজ ঘর থেকে ভক্ত রায়ের স্ত্রী সুজাতা রানী রায় ও তার মেয়ে নীলাদ্রি রায়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এর পরের দিন ১৯ ডিসেম্বর ভারতীয় গণমাধ্যম টিভি নাইন বাংলা একটি সংবাদ প্রচার করে। যেখানে বলা হয়, বাংলাদেশে বেছে বেছে সংখ্যালঘুদের নিধন করা হচ্ছে। সাম্প্রদায়িকতার জের ধরে সনাতন ধর্মাবলম্বীর মা ও তার শিশুকন্যাকে হত্যা করে ঘরের ভেতর ঝুলিয়ে রেখেছে কট্টরপন্থীরা। ধর্ম পরিবর্তন নিয়ে এই হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে বলে জানানো হয়।
ভারতীয় গণমাধ্যমে এমন সংবাদ প্রচার হওয়ার পর সরেজমিনে যাওয়া হয় খানসামা উপজেলার আরাজি জুগিরঘোপা বেণুপাড়া এলাকায়। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, মোটামুটি স্তব্দ এলাকা। নিহতের বাড়িতে প্রবেশ করে দেখা যায় বাড়ির বরান্দার সিঁড়ির মধ্যে নিহতের স্বামী ভক্ত চন্দ্র রায় বসে রয়েছেন। আর আঙ্গিনায় বসে রয়েছেন ভক্ত রায়ের বাবা বিজয় রায়। বাড়ির ভেতরে বেশকিছু প্রতিবেশী ও স্বজন।
পরিবারের লোকজন জানায়, বুধবার দিবাগত রাত ১০ টার দিকে ভক্ত রায়ের স্ত্রী সুজাতা রানী রায় ও তাদের ৪ বছর বয়সী কন্যা সন্তান নীলাদ্রী রায়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই একটি বাড়িতেই বিজয় রায়, তার স্ত্রী ত্রিফুল রানী, তাদের ৪ সন্তান, তাদের স্ত্রী ও সন্তানরা বসবাস করে আসছেন। এক কথায় যৌথ পরিবার। তবে ভক্ত রায়ের স্ত্রী সুজাতা রানী ও তার মেয়ে নীলাদ্রী যখন ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলতে দেখতে পায় পরিবারের সদস্যরা, তখন বাড়িতে ছিলেন না বিজয় রায় ও তার ৪ ছেলে। তবে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, এটি আত্মহত্যা। এই ঘটনার সঙ্গে সাম্প্রদায়িকতার কোন বিষয় নেই।