২০১৬ সালে গুলশানের হলি আরটিজেন বাংলাদেশ ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহতম জঙ্গি হামলা হয়। সে হামলায় নিহত ফারাজ হোসেন কে নিয়ে এতদিন অসত্য ও বিকৃত তথ্য প্রচার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। শুধু তাই নয় একটি পত্রিকায় ফারাজকে একজন সাহসী তরুণ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করা হয়েছে। সেজন্য পরিকল্পিতভাবেই ইতিহাসের বিকৃত করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা এসব কর্মকান্ডকে অপসংবাদিকতা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। সম্প্রতি পত্রিকাটির অপরাধ বিষয়ক বিটের সাবেক সাংবাদিক আহমেদ জায়েদের প্রথম আলোর জঙ্গিবাদ কভারেজ ও আমার অভিজ্ঞতা শিরোনামে এক ফেসবুক স্ট্যাটাস ঘিরে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের এক পোস্টে আহমেদ জায়েফ বলেন, গুলশানের হোলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার ঘটনায় নিহত ফারাজ ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রথম আলোর মালিক লতিফুর রহমানের নাতি। ফারাজকে নিয়ে প্রথম আলো ‘বিপদে বন্ধুর পরিচয় দেয়া’ একজন ‘সাহসী তরুণ’ হিসেবে সংবাদ, কলাম, মতামত ও স্মৃতিচারণা প্রকাশ করে আসছে।
প্রথম আলো প্রচার করে, ‘মুসলিম হওয়ায় জঙ্গিরা ফারাজকে ছেড়ে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু ফারাজ তার বন্ধু অবিন্তা কবির ও তারুশিকে ছেড়ে আসতে চাননি। তাই তিনজনকেই হত্যা করে জঙ্গিরা।’
এ প্রচারণার মূল সূত্র নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় ২০১৬ সালের ২ জুলাই অর্থাৎ ঘটনার পরদিন প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন। প্রতিবেদনে ফারাজের ভাগ্নে হিশাম হোসেনকে উদ্ধৃত করা হয়। যদিও হিশামের এ বক্তব্যের ব্যাপারে কিছুই জানতেন না নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকার ওই নিউজটিতে বাংলাদেশ থেকে তথ্য পাঠানো সাংবাদিক জুলফিকার আলী মানিক। আহমেদ জায়েফ বলেন, নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকার এ তথ্যের কোনো সত্যতা নেই।
জঙ্গিরা হোলি আর্টিজানে হামলার পরপরই হত্যাকাণ্ড চালায়, যা প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানে প্রতিষ্ঠিত। সকাল পর্যন্ত নিহত হওয়াদের কেউই জীবিত ছিলেন না। জিম্মি দশা থেকে পালিয়ে আসা বা ছাড়া পাওয়া ব্যক্তিদের একটা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সাক্ষাৎকার আমি নিজে নিয়েছি। তাদের কেউই বন্ধুদের ছেড়ে ফারাজের আসতে না চাওয়ার মতো কোনো ঘটনা দেখেননি। পুলিশের তদন্তেও এমন কিছু উঠে আসেনি। অন্যান্য গণমাধ্যমও তাদের রিপোর্টে এমন কোনো ঘটনার বর্ণনা প্রকাশ করেনি। এমনকি প্রথম আলো নিজেও এ ঘটনা নিয়ে কোনো বিস্তারিত সংবাদ উপস্থাপন করতে পারেনি।