পুজির ঘাটতি, ডলারের উচ্চ মূল্য, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকটে ভুগছে দেশের বড় শিল্প কারখানাগুলো। ফলে রড সিমেন্ট সিরামিক ও বস্ত্র খাতার মত বৃহৎ শিল্প গুলোতে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। সরকারি বেসরকারি বড় প্রকল্পের কাজ বন্ধ থাকায় নির্মাণ শিল্পের তৈরি উপকরণ সিমেন্ট ও রডের চাহিদা পর্যায়ে ব্যাপকভাবে কমে গেছে। ফলে এখন চতুর্মুখী সংকটে পড়েছে দেশে শিল্প খাত।
সংশ্লিষ্টরা জানাচ্ছেন, ৩ হাজারের বেশি বৃহৎ শিল্প রয়েছে দেশে। মোট কর্মসংস্থানের ৬৮ শতাংশই উৎপাদনমুখী শিল্পের সঙ্গে জড়িত। এ ছাড়া কাঁচামালের ৬৩ শতাংশ ও বিদ্যুৎ-জ্বালানির ৫৬ শতাংশই ব্যবহার করে রড-সিমেন্ট, বস্ত্র খাতের মতো বৃহৎ শিল্পগুলো। ফলে ডলারের উচ্চমূল্য এবং গ্যাস ও বিদ্যুৎসংকট এসব শিল্পের উৎপাদনে সরাসরি নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এর ওপর বাজারে চাহিদা না থাকায় মিল মালিকরা বিপাকে পড়েছেন। অনেকেই পুঁজি হারানোর শঙ্কায় আছেন।
বিগত বছরগুলোতে জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত এ তিন মাস রড ও সিমেন্টের দাম থাকে ঊর্ধ্বমুখী। গত বছরও এ সময়ে রড বিক্রি হয়েছে টনপ্রতি ১ লাখ ৫ হাজার থেকে ১ লাখ ৭ হাজারের মধ্যে। কিন্তু এবারের চিত্র ভিন্ন। চলতি বছর রড বিক্রি হচ্ছে টনপ্রতি ৮৫ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকায়। একই অবস্থা সিমেন্টের ক্ষেত্রেও। বর্তমানে সিমেন্ট বিক্রি হচ্ছে কোম্পানি ভেদে প্রতি বস্তা ৪৭০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা। গত বছর একই সময়ে যা ছিল ৪৯০ থেকে ৫৩০ টাকা। উৎপাদনের বিপরীতে চাহিদা কমে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে উৎপাদনে। এরই মধ্যে প্রায় সব রড এবং সিমেন্ট কারখানার উৎপাদন নেমেছে অর্ধেকে।
এইচএম স্টিল ও গোল্ডেন ইস্পাতের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সরোয়ার আলম বলেন, ‘ভরা মৌসুমেও বিক্রিতে প্রত্যাশিত সাড়া পাচ্ছে না রড-সিমেন্টসহ নির্মাণসামগ্রী তৈরিকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। এ সময়ে বেচাবিক্রি থাকে বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে বেশি। সরকারি-বেসরকারি বড় এবং মাঝারি নির্মাণ প্রকল্প বন্ধ থাকায় নতুন করে প্রকল্প শুরু না করার প্রভাব পড়েছে এ খাতে। আশার কথা হচ্ছে, ডিসেম্বরের শেষদিকে এসে কিছু কিছু বিক্রি হচ্ছে।