বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫, ১১:৪৭ অপরাহ্ন

নির্মম নির্যাতনে প্রাণ গেলো লিবিয়াতে বাংলাদেশি এক নাগরিকের

প্রতিনিধির / ৩০ বার
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০২৫

দালালের খপ্পরে পরে উন্নত জীবনের আশায় ইতালিতে পারি জমতে চেয়েছিলো মাদারীপুরের রাকিব মহাজন নামে এক যুবক। দীর্ঘ ৩ বছর লিবিয়ার গেমঘরে দালাল চক্রের ভয়াবহ অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে অবশেষে মারা গেলেন।সেই খবরে নিহতের পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। বাকরুদ্ধ বাবা-মা, ভাই-বোনসহ পাড়া প্রতিবেশীরা।

বুধবার রাতে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন তার পরিবার। রাকিব মহাজন মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের পাখিরা গ্রামের নাজিম উদ্দিন মহাজনের ছেলে।

নিহত রাকিবের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিন বছর আগে উন্নত জীবনের আশায় মাদারীপুর সদর উপজেলার মৃত ফটিক মৃধার ছেলে জাহাঙ্গীর মৃধার প্রলোভনে পড়ে রাকিব মহাজন। জাহাঙ্গীর মৃধা তার ভায়রা শরীয়তপুরের পালং থানার ধানুকা ইউনিয়নের ছোট বিনোদপুর গ্রামের সোহাগ মাতুব্বরের মাধ্যমে ২৭ লাখ টাকায় ইতালিতে পৌঁছে দেয়ার চুক্তি করে। সে মতে ২৭ লাখ টাকা দিয়ে তিন বছর আগে রাকিব পাড়ি জমান লিবিয়া। তবে লিবিয়ার নেয়ার পরে গেমঘরে রেখে আরও টাকার জন্য নির্যাতন চালাতে থাকে সোহাগ মাতুব্বর। পরে রাকিবের বাবা নাজিম উদ্দিন মহাজন ধার-দেনা করে আরও ৫ লাখ টাকা দেন সোহাগকে। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। লিবিয়ায় দুই বছর চার মাস অসহ্য যন্ত্রণা-নির্যাতন সহ্য করে কাটিয়েছে রাবিক।

আরও জানা যায়, দুই বছর চার মাস পরে সোহাগের গেমঘর থেকে বেরিয়ে আরেক দালাল সদর উপজেলার ঝাউদি ইউনিয়নের ব্রাক্ষ্মন্দী গ্রামের মাজেদ খলিফাকে ধরে রাকিবের পরিবার। তাকেও ৮ মাস আগে ১৫ লাখ টাকা দেয় গেম করার জন্যে। কিন্তু তিনিও টাকা নিয়ে গেমঘরেই নির্যাতন চালায় সোহাগকে। এক পর্যায়ে রাকিব গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে লিবিয়ার একটি হাসপাতালে নেয়ার পর মৃত্যু হয় রাকিবের। তার মৃত্যুর খবর পরিবারকে দালাল মাজেদ খলিফাই রাকিবের পরিবারকে জানান। দেন প্রাণহীন দেহের কয়েকটি ছবি-ভিডিও। এতে শোকের ছায়া নেমে আসে পুরো পরিবারসহ এলাকাবাসীর মধ্যে।

এ ব্যাপারে নিহত রাকিবের বাবা নাজিম উদ্দিন মহাজন জানান, ‘দফায় দফায় টাকা দিয়ে আমি সর্বস্বান্ত হয়ে গেছি। এ পর্যন্ত সোহাগ আর মাজেদকে ৪৫ লাখ টাকা দিয়েছি। তারপরে এখন আমার ছেলের মৃত্যুর খবর শুনতে হলো। আমার ছেলে না খাইয়ে মেরে ফেলছে। কয়েকদিন আগেও আমার ছেলে ভিডিওতে তার নির্যাতনের কথা বলেছে। আর বাঁচার জন্যে আকুতি করেছে। কিন্তু আমার ছেলেকে বাচাতে পারলাম না।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ