কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহ-সভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ, চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও স্থানীয় রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ে বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগ উটেছে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, মানুষের জায়গা দখল ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়। কেউ চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তাদের জান মালের উপর হামলা এবং ভাঙচুর, সাংবাদিকদের উপর হামলা, এমনকি সাধারণ মানুষকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি ও বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে কটুক্তি করেছেন খন্দকার নাসির।
অভিযোগে আরো বলা হয়, অর্থের বিনিময়ে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অমান্য করে ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদের দোসর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিএনপির দলে অন্তর্ভুক্ত করছেন খন্দকার নাসিরুল। বিগত সময়ে হামলা মামলা সহ্য করা দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন না করে বিভিন্ন ভাবে তাদের হুমকি-ধামকি এবং অপবাদ দিচ্ছেন। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের পদধারী একাধিক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের বিএনপিতে যোগদানের করানো হয়েছে। খন্দকার নাসিরুল ইসলাম আওয়ামী লীগ নেতাদের পাশে বসিয়ে বিভিন্ন সভা-সমাবেশ করছেন। এতে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। অতীতেও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে একাধিকবার দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
গত ৮ জানুয়ারি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বরাবর ফরিদপুর-১ (বোয়ালমারী, মধুখালী, আলফাডাঙ্গা) আসনের ৪০ জন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতার সাক্ষরিত লিখিত আবেদন করেন বোয়ালমারী উপজেলার ড. শাহাবুদ্দিন আহমেদ। খন্দকার নাসিরুলের বিরুদ্ধে একই অপরাধের অভিযোগে গত বছরের ২ নভেম্বর প্রথম দফা অভিযোগ করলেও বিএনপির কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহ-সভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম তার নিজ নির্বাচনীয় এলাকা ফরিদপুর-১ (বোয়ালমারী, মধুখালী, আলফাডাঙ্গা) আসনে প্রচার-প্রচারণা ও দলীয় সাংগঠনিক তৎপরতা শুরু করছেন।
আসনটির বিএনপির নেতাকর্মীদের অভিযোগ, নাসির স্থানীয় বিএনপির ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন না করে আওয়ামী লীগের সমর্থিত একাধিক চেয়ারম্যান ও পদধারী নেতাদেরকে বিএনপিতে যোগদান করিয়ে তার মাঠ গোছাচ্ছেন।
একাধিক বিএনপির নেতা জানান, মধুখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য, উপজেলার রায়পুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জাকির মিয়া এবং আওয়ামী লীগ নেতা উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. জাহিদুল হাসান টিপু গত ১৯ অক্টোবর মধুখালীর একটি নৌকা বাইচ অনুষ্ঠানে ফুল দিয়ে খন্দকার নাসিরুলের হাত ধরে বিএনপিতে যোগদান করেন। গত ৩০ অক্টোবর বোয়ালমারীতে খন্দকার নাসিরের জনসভায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মাওলা বিশ্বাস মঞ্চে ছিলেন। খন্দকার নাসিরের হাত ধরে বিএনপিতে যোগদান করেন আওয়ামী লীগ নেতা ও মেগচামী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাবির উদ্দিন শেখ এবং সাবেক ডিবি প্রধান হারুনের ক্যাশিয়ার হিসেবে পরিচিত বোয়ালমারী উপজেলার রুপাপাত ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সোনা মিয়া।