অর্থের অভাবে রোজা রেখে ভর্তির জন্য পড়ালেখা করেছেন দেশের বৃহত্তম সাবেক ছিটমহলের এই শিক্ষার্থী। সুযোগ পান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। তবে তার এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে আর্থিক সংকট। সন্তানের ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় খুশির পরিবর্তে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছে সদ্য স্বামীহারা গৃহিণী মায়া বেগম।
ময়নুল হকের বাড়ী কুড়িগ্রামের সীমান্ত ঘেঁষা ফুলবাড়ী উপজেলার সদর ইউনিয়নের বিলুপ্ত হওয়া দেশের বৃহৎ ছিটমহলের দাসিয়ারছড়ার দোলাটারী গ্রামে। তিনি ২০২২ সালে গংগারহাট এমএএস উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ এবং ২০২৪ সালে ফুলবাড়ী ডিগ্রি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।
সরেজমিনে শিক্ষার্থী ময়নুল হকের বাড়ীতে গিয়ে দেখা গেছে, মাত্র তিন শতক জমিতে জরাজীর্ণ টিনসেড ঘর। সেই ঘরে এক পাশে থাকেন মা মায়া বেগম ও ছোট বোন লুৎফা খাতুন এবং অন্যপাশে থাকেন ময়নুল হক ও তার ছোট ভাই মেরাজ। ময়নুল হকের বাবা লুৎফর রহমান ছিলেন ইটভাটার শ্রমিক। ইটভাটায় কাজ করে স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ের ভরনপোষণ চালিয়েছেন তিনি। শত কষ্টের মাঝেও তিন সন্তানের পড়াশোনার কোনও কমতি হতে দেননি।
ময়নুল এসএসসি ও এইচএসসিতে পড়াকালীন অবস্থাতেই ছাত্র পড়াতেন। নিজের পড়াশোনা ও অন্যান্য খরচ মিটিয়ে সংসারে কিছুটা সহযোগিতা করতে দিনমজুরীর কাজও করতো সে। তবে এখন ভর্তির সুযোগ পেয়েও বাবাকে হারিয়ে ভর্তি ও পড়াশোনা চালানো নিয়ে দুচিন্তায় দিন পার করছে শিক্ষার্থী ময়নুল হক ও তার মা মায়া বেগম।
দরিদ্র্য পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি লুৎফর রহমান মারা যাওয়ার পর পুরো পরিবারের মাঝে অন্ধকার নেমে এসেছে। ময়নুলের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি, পড়াশোনা চলাকালীন খরচ ও ছোট ছেলে মেরাজ এবং ছোট মেয়ে লুৎফা খাতুনের পড়াশোনা ও ভরনপোষণ চালিয়ে যাওয়া নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন মায়া বেগম।