মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৩:৪৪ অপরাহ্ন

এক লাখ ৩০ হাজার টাকা খরচ করলেই নাগরিকত্বের সনদ পাচ্ছিল রোহিঙ্গারা

প্রতিনিধির / ৭৯৮ বার
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২২
এক লাখ ৩০ হাজার টাকা খরচ করলেই নাগরিকত্বের সনদ পাচ্ছিল রোহিঙ্গারা
এক লাখ ৩০ হাজার টাকা খরচ করলেই নাগরিকত্বের সনদ পাচ্ছিল রোহিঙ্গারা

মাত্র আধাঘণ্টায় জন্ম নিবন্ধন আর মাস গড়াতেই বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) পেয়ে যাচ্ছিল রোহিঙ্গারা। দালালচক্রের মাধ্যমে এক লাখ ৩০ হাজার টাকা খরচ করলেই নাগরিকত্বের সনদ হাতে চলে যেত।

গত মঙ্গলবার রাতে নির্বাচন কমিশনের নিয়োগ করা পাঁচজন অস্থায়ী ডাটা এন্ট্রি অপারেটরসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর এই তথ্য বেরিয়ে এসেছে। ২০১৯ সালে চট্টগ্রাম নির্বাচন অফিসকেন্দ্রিক রোহিঙ্গাদের ভোটার করার জালিয়াতচক্র চিহ্নিত হওয়ার পর মঙ্গলবার নতুন চক্রের এই ১০ জনকে আটক করে চট্টগ্রাম গোয়েন্দা পুলিশ।চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহর আবাসিকের বি-ব্লক এলাকার হাউজিং এস্টেট উচ্চ বিদ্যালয়ে অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে এই ১০ জনকে আটক করা হয়।এর মধ্যে পাঁচজন ডাটা এন্ট্রি অপারেটর, দুজন রোহিঙ্গা এবং বাকি তিনজন দালালচক্রের সদস্য। রোহিঙ্গাদের কাছে পাওয়া গেছে এনআইডির গোপন ফরম। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন থেকে এসব জন্ম নিবন্ধন সম্পন্ন হলেও তাঁদের ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকার।

আটক ব্যক্তিরা হলেন দালালচক্রের সদস্য মো. নূরুল আবছার (২৮), শামসুর রহমান ওরফে শামসু মাস্টার (৬০), মো. কামাল (৪২) এবং পাহাড়তলী থানা নির্বাচন অফিসের টিম লিডার মো. ইয়াছিন আরাফাত (২২), পাহাড়তলী থানা নির্বাচন অফিসের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মো. নূর নবী রাহাত (২৫), একই অফিসের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মো. মিজানুর রহমান (২৩), ফরহাদুল ইসলাম (২৮), সহকারী ডাটা এন্ট্রি অপারেটর ইমন দাশ (২০), কুতুপালং ক্যাম্পের রোহিঙ্গা মো. কামাল হোসেন (৪৫) ও পারভীন আক্তার।

আটকের পরপরই ১০ জনকে টানা জিজ্ঞাসাবাদ করছে গোয়েন্দা পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা স্বীকার করেন, যেকোনো ব্যক্তির শুধু নাম, পিতার নাম এবং বয়স উল্লেখ করে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো হয় ঢাকায়। আধাঘণ্টার মধ্যেই তৈরি হয়ে যায় ভেরিফায়েড জন্ম নিবন্ধন।সিএমপির উপকমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ আলী হোসেন  বলেন, ‘আমরা মোট ১০ জনকে আটক করেছি। এর মধ্যে পাঁচজন নির্বাচন কমিশনের নিয়োগ দেওয়া অস্থায়ী ডাটা এন্ট্রি অপারেটর। তাঁদের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ ছিল।

মূলত দালাল নূরুল আবছার ও শামসু মাস্টার ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের সংগ্রহ করে এনে চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় রেখে টাকার বিনিময়ে এনআইডি তৈরির কাজ করেন। এ জন্য প্রতিজনের কাছ থেকে এক লাখ ৩০ হাজার টাকা নেওয়া হয়। আর ডাটা এন্ট্রি অপারেটররা প্রতিটি ফরমের বিপরীতে সাড়ে ৯ হাজার টাকা নেন। ’ তিনি বলেন, ‘আমরা রোহিঙ্গাদের কাছে যে নিবন্ধন ফরম-২ পেয়েছি, তা কারো কাছে যাওয়ার কথা নয়। এটি শুধু নির্বাচনসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছেই থাকার কথা। ’

জানতে চাইলে চট্টগ্রামের সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম  বলেন, ‘ডিবি অফিস থেকে আমাদের দুটি নিবন্ধন ফরম-২ দিয়েছিল যাচাইয়ের জন্য, যা রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে তারা উদ্ধার করেছে। আমরা সেগুলো ঢাকা নির্বাচন কমিশনে পাঠিয়েছি যাচাইয়ের জন্য। ’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ