শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ০২:০৬ পূর্বাহ্ন

পোশাকের ন্যায্যমূল্য দেওয়ার ক্ষেত্রে বৈশ্বিক ব্র্যান্ড ক্রেতাদের অন্যায্য

প্রতিনিধির / ৯৫ বার
আপডেট : রবিবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৩
পোশাকের ন্যায্যমূল্য দেওয়ার ক্ষেত্রে বৈশ্বিক ব্র্যান্ড ক্রেতাদের অন্যায্য
পোশাকের ন্যায্যমূল্য দেওয়ার ক্ষেত্রে বৈশ্বিক ব্র্যান্ড ক্রেতাদের অন্যায্য

রানা প্লাজা ধসের পর গত ১০ বছরে রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানার নিরাপত্তা মান উন্নত হয়েছে। তবে পোশাকের ন্যায্যমূল্য দেওয়ার ক্ষেত্রে বৈশ্বিক ব্র্যান্ড ক্রেতাদের ক্রয়চর্চা আগের মতোই অন্যায্য রয়ে গেছে। অতিমারি করোনা এই ক্রয়চর্চাকে আরও উস্কে দিয়েছে।

বাংলাদেশের পোশাক খাত নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি (এনওয়াই ইউর) স্টার্ন সেন্টার ফর বিজনেস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের এক প্রতিবেদনে এমন পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনে ক্রেতাদের অন্যায্য অনুশীলন প্রসঙ্গে অযৌক্তিক মূল্যহ্রাসের জন্য সরবরাহকারীদের চাপ দেওয়া, বিলম্বিত মূল্য পরিশোধ করা, রপ্তানি আদেশের চুক্তি হওয়ার পরও রপ্তানি আদেশ বাতিল করা ইত্যাদি উল্লেখ করে বলা হয়, এতে অর্থনৈতিক চাপে পড়েছেন উদ্যোক্তারা। এর ফলে অনেকেই শ্রমিক-কর্মচারীদের মজুরি এবং অন্যান্য সুবিধা কমাতে বাধ্য হয়েছেন।এনওয়াই সেন্টারের এপ্রিল সংখ্যায় ‘একটি বিভক্ত অংশীদারিত্ব : কীভাবে পোশাকের ব্র্যান্ডগুলো সরবরাহকারীদের শোষণ এবং শ্রমিকদের ক্ষতি করে– এ ব্যাপারে কী করা যেতে পারে’ শিরোনামের প্রতিবেদনটি বাংলাদেশের পোশাক খাতের উদ্যোক্তা এবং শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে তৈরি করা হয়েছে। রানা প্লাজা ধসের দশম বছর পূর্তি সামনে রেখে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়। এটি প্রকাশ করা হয় গতকাল শনিবার।

প্রতিবেদনে পোশাকের অযৌক্তিক মূল্য হ্রাস এবং অত্যধিক ছাড়ে সংগ্রহ করার মানসিকতা বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে, যাতে শ্রমিকদের বেতন কমাতে না হয়। এ ছাড়া শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি এবং মানবাধিকার রক্ষায় ক্রেতা এবং রপ্তানিকারকদের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়।রানা প্লাজা ধস প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে বলা হয়, মর্মান্তিক ও দুর্ঘটনার পর গত ১০ বছরে রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক কারখানার নিরাপত্তা মান উন্নত হয়েছে। তবে পোশাকের ন্যায্যমূল্য দেওয়ার ক্ষেত্রে বৈশ্বিক ব্র্যান্ড ক্রেতাদের ক্রয়চর্চা আগের মতোই রয়ে গেছে। অতিমারি করোনা অন্যায্য এ চর্চাকে কিছুটা উস্কে দিয়েছে। এতে কারখানা কর্তৃপক্ষ অর্থ সংকটে পড়ে, যার প্রভাবে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন সাধারণ শ্রমিকরা। করোনা কেটে গেলে পরিস্থিতির উন্নতি হয়। পোশাকের দর কমানোর চাপ অব্যাহত রাখে ব্র্যান্ড ক্রেতারা।

প্রতিবেদনে রপ্তানি আদেশ প্রক্রিয়ারও সমালোচনা করা হয়। এতে বলা হয়, রপ্তানি আদেশের আলোচনায় ‘ওপেন কস্টিং’ পদ্ধতির অপব্যবহার করেছে ক্রেতারা। এ পদ্ধতিতে ব্র্যান্ড ক্রেতাদের কাছে উৎপাদন খরচের বিস্তারিত তুলে ধরতে হয় কারখানা কর্তৃপক্ষকে। এর ফলে কাজ পেতে কারখানাগুলো নিজেদের মধ্যে তুমুল প্রতিযোগিতা শুরু করে। অনেক ক্ষেত্রে উৎপাদন খরচের চেয়েও কম দামে রপ্তানি আদেশ নিতে বাধ্য হয় কারখানা কর্তৃপক্ষ।প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক নিয়ে বাংলাদেশ থেকে পোশাক নিয়ে থাকে এ রকম ১০টি ব্র্যান্ড ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের মন্তব্য জানার চেষ্টা করা হয়েছে এনওয়াইইউ স্ট্যান সেন্টারের পক্ষ থেকে। এর মধ্যে মাত্র চারটি প্রতিষ্ঠান মন্তব্য করতে রাজি হয়েছে। বাকিরা সাড়া দেয়নি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ