পাবনার সাঁথিয়ায় সেলিনা আক্তার (৫০) নামের এক বিধবা নারীকে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। সোমবার (২৬ জুন) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার শহিদনগর পাইকরহাটি বিশ্বাসপাড়া গ্রামে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত সেলিনা আক্তার ওই গ্রামের মৃত আইয়ুব আলী খান বিডিআরের স্ত্রী।
এ ঘটনায় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আব্দুর রহিম শেখ (৪৭) নামের একজনকে আটক করেছে।আটক রহিম আমিনপুর থানার রুপপুর ঘোষপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুর রহমান শেখের ছেলে।স্থানীয় ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার শহিদনগর বিশ্বাসপাড়া গ্রামের বিডিআর আইয়ুব আলী খান প্রায় ১০ বছর আগে স্ট্রোক জনিত কারণে মারা যান। স্বামীর মৃত্যুর পর ৩ মেয়েকে নিয়ে সেলিনা আক্তার ওই বাড়িতে বসবাস করতে থাকেন। মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার পর তিনি একাই ওই বাড়িতে থাকতেন।
সোমবার (২৬ জুন) বিকেলে সেলিনা আক্তার তার ছোট মেয়ে একই পাড়ার শারমিন আক্তারের বাড়িতে বেড়াতে যান। সেখান থেকে সন্ধ্যায় তিনি নিজ বাড়িতে চলে আসেন। এরপর তার মেয়ে তাকে একাধিকবার ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেননি। পরে শারমিন তার স্বামী আলামিন হোসেন ও তার শাশুড়িকে রাত সাড়ে ৮টার দিকে তার মায়ের বাড়ি পাঠান।তারা সেখানে গিয়ে দেখতে পান সেলিনা আক্তারের গলা কাটা রক্তাক্ত লাশ তার শয়ন কক্ষের মেঝেতে পড়ে আছে।এ সময় তাদের ডাক চিৎকারে স্বজন ও আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসেন এবং থানা পুলিশকে খবর দেন। থানা পুলিশ রাত ১২টার দিকে লাশ উদ্ধার করে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের মেঝো মেয়ে যুথি পারভিন বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
নিহত সেলিনা আক্তারের মেয়ে যুথি পারভীন বলেন, ‘আমার বাবার মৃত্যুর পর মা ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হন। ডায়াবেটিস চেকাপের জন্য আমার মা সাঁথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুর ডায়াবেটিক হাসপাতালে যেতেন। সেখানে রক্ত সংগ্রহ বিভাগের আব্দুর রহিম শেখ নামের একজনের সাথে মায়ের পরিচয় হয়। সেই সুবাদে আব্দুর রহিম বাবার মৃত্যুর পর থেকে আমাদের বাড়িতে নিয়মিত আসা যাওয়া করতেন এবং মায়ের ডাক্তার দেখানোসহ বিভিন্ন কাজকর্ম করে দিতেন। আমরা সেটা ভালো চোখে দেখিনি। আমার মায়ের হত্যাকাণ্ডের সাথে যারাই জড়িত থাকুক আমরা তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
সাঁথিয়া থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ওই দিন রাতেই লাশ উদ্ধার করা হয়েছে এবং ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। সন্দেহভাজন আব্দুর রহিম শেখ নামের একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। হত্যার মূল রহস্য উৎঘাটন করে আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।