শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৬:৩৩ অপরাহ্ন

সরকারিভাবে গম আমদানি বেড়েছে ২০ শতাংশ

প্রতিনিধির / ২৭৪ বার
আপডেট : বুধবার, ১২ জুলাই, ২০২৩
সরকারিভাবে গম আমদানি বেড়েছে ২০ শতাংশ
সরকারিভাবে গম আমদানি বেড়েছে ২০ শতাংশ

সরকারি উদ্যোগে গম আমদানি প্রায় ২০ শতাংশ বাড়লেও বেসরকারি উদ্যোগে আমদানি কমেছে ৮ শতাংশ। মজুদ নিশ্চিত করতে সরকার এবার আগেভাগেই বিভিন্ন বিকল্প দেশ থেকে আমদানি করে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করে। কিন্তু সেই তুলনায় পিছিয়ে পড়েছে বেসরকারি আমদানি। অথচ বেসরকারি উদ্যোগে সবচেয়ে বেশি গম আমদানি হয়।

এই আমদানি কমার দুটি কারণের কথা বলছেন ব্যবসায়ীরা। একটি হচ্ছে, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমতির দিকে থাকলেও ঋণপত্র সংকটের পাশাপাশি ডলারের বিনিময়মূল্যে স্থিতিশীলতা না থাকা এবং দেশে গমের দাম বেড়ে যাওয়ায় চাহিদা ব্যাপকভাবে কমে যাওয়া।খাতুনগঞ্জের এক আড়তদার বলেন, ‘এবার গম আমদানি বড় কয়েকটি শিল্প গ্রুপের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। ছোট ব্যবসায়ীরা আমদানি করতে না পারায় বাজারে তাঁদের ভূমিকা ছিল না।

ফলে বাজার বড় ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে থাকায় দাম কমারও সুযোগ ছিল না।’ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, গত রমজানে ছোলার বাজার বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, শুরু থেকেই আমদানির সুযোগ পেয়েছে বড় শিল্প গ্রুপগুলো। রমজানের ২০ দিন আগেও তারা বাজার ধরে রেখেছিল, দাম কমায়নি। হঠাৎ সুযোগ পেয়ে ছোট-মাঝারি আমদানিকারকরা রাশিয়া-ইউক্রেনের গম ভারত থেকে আমদানি করে বাজারে সরবরাহ বাড়িয়ে দেয়।

তারা মূল পাইকারি বাজারে না দিয়ে ছোট বাজারে দিতে থাকলে ছোলার দাম রমজানের আগেই কমতে শুরু করে। যদি গমের ক্ষেত্রেও সেই সুযোগ দেওয়া যেত তাহলে বাজারে দাম কমে যেত। সুফল পেত ভোক্তারা।খাদ্য বিভাগের হিসাবে, বেসরকারি উদ্যোগে ২০২২-২৩ অর্থবছরে গম আমদানি হয়েছে প্রায় ৩২ লাখ টন। এর আগের ২০২১-২২ অর্থবছরে গম আমদানি হয়েছিল ৩৪ লাখ ৬৬ হাজার টন; তারও আগের ২০২০-২১ অর্থবছরে আমদানি হয়েছিল ৪৮ লাখ ৬৪ হাজার টন।

সে হিসেবে তিন বছর ধরেই আমদানি কমেছে।গম আমদানিকারক এটিআর ট্রেডিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুল আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলেও দেশের বাজারে দাম সেভাবে না কমার মূল কারণ হচ্ছে সবাই ঋণপত্র খুলতে না পারা। সেই সঙ্গে আগে ডলারের বিনিময় মূল্য ছিল ৮৫ টাকা এখন সেটি বেড়েছে ১০৮ টাকার বেশি। বিনিময়মূল্য স্থিতিশীল করে শতভাগ মার্জিন কমিয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে ঋণপত্র খুলতে সহযোগিতা করা গেলে বাজারে সুফল মিলবে।’

খাদ্য বিভাগের হিসাবে, ২০২০-২১ অর্থবছরে সরকারি উদ্যোগে গম আমদানি হয়েছিল পাঁচ লাখ ৪৬ হাজার টন। ২০২১-২২ অর্থবছরে আমদানি হয়েছিল পাঁচ লাখ ৪৬ হাজার টন। আর সদ্যঃসমাপ্ত ২০২২-২৩ অর্থবছরে গম আমদানি হয়েছে ছয় লাখ ৮০ হাজার টন। সে হিসেবে গত অর্থবছরের তুলনায় সদ্যঃসমাপ্ত অর্থবছরে আমদানি বেড়েছে প্রায় ২০ শতাংশ।

আন্তর্জাতিক বাজারে গম বিক্রির তথ্য সরবরাহকারী মার্কেট ইনসাইডারের এক বছরের চিত্রে দেখা গেছে, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর আগে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে টনপ্রতি গম বিক্রি হতো ২৯৯ মার্কিন ডলারে। যুদ্ধ শুরুর দুই দিন আগেও দাম ছিল ৩০৭ ডলার। যুদ্ধ শুরুর পরদিন ২৫ ফেব্রুয়ারি দাম বেড়ে ৩৫৪ ডলারে উন্নীত হয়। এরপর হু হু করে বাড়তে বাড়তে ২০২২ সালের মে মাসে গিয়ে ৪৬৫ ডলারে বিক্রির রেকর্ড গড়ে। কিন্তু এখন সেই গম বিক্রি হচ্ছে টন ২৫৩ ডলারে।এদিকে ইউক্রেন-রাশিয়া থেকে গম আমদানি করতে না পেরে বিকল্প দেশ হিসেবে ভারত থেকে আমদানি শুরু করে বাংলাদেশ। এরপর জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় রাশিয়া-ইউক্রেন গম সরবরাহে সম্মতি দিলে বিশ্ববাজারে এর সুফল মেলে। ধীরে ধীরে দাম কমতে থাকে আন্তর্জাতিক বাজারে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ