শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২১ অপরাহ্ন

নজরদারি এড়াতে নতুন রুটে ইয়াবার চালান সরবরাহ

প্রতিনিধির / ২৫৭ বার
আপডেট : শনিবার, ১৫ জুলাই, ২০২৩
নজরদারি এড়াতে নতুন রুটে ইয়াবার চালান সরবরাহ
নজরদারি এড়াতে নতুন রুটে ইয়াবার চালান সরবরাহ

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি এড়াতে নতুন রুটে ইয়াবার চালান সরবরাহ করছে মাদক কারবারিরা। মিয়ানমার থেকে আসা ইয়াবা সাধারণত কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে ঢাকায় আনা হতো। তবে এই রুটে নজরদারির কারণে এখন অন্য এলাকা ঘুরে তার পর চালান আসছে ঢাকায়। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার এমন একটি চালান রাজধানীর গাবতলী এলাকায় জব্দ করা হয়েছে, যা টেকনাফ থেকে রাঙামাটি ঘুরে আনা হয়েছে। এর গন্তব্য ছিল ঠাকুরগাঁও। গতকাল শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। এ সময় পৃথক অভিযানে ৪১ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধারের কথা জানানো হয়।

রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে ডিএনসি মহানগর উত্তর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির ঢাকা বিভাগীয় প্রধান মজিবুর রহমান পাটওয়ারী বলেন, এর আগে ঠাকুরগাঁও অঞ্চলের কয়েকটি মাদকের চালান ঢাকায় জব্দ করায় কারবারিরা সতর্ক হয়ে ভিন্ন কৌশল বেছে নেয়। মাদক লেনদেনের আগে তাদের চার-পাঁচজনের একটি দল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে। তাদের ‘ক্লিয়ারেন্সের’ ভিত্তিতে নিরাপদ কোনো স্থানে লেনদেন সম্পন্ন হয়। সম্প্রতি জানা যায়, গাবতলী এলাকায় এ চক্রের ইয়াবার একটি চালান হাতবদল হবে।

এর ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে সেখানে চা বিক্রেতার ছদ্মবেশে অবস্থান নেন ডিএনসি উত্তরের কর্মকর্তারা। পরে উত্তরবঙ্গের মাদক কারবারিদের অন্যতম সাধন তনচংগ্যাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার সঙ্গে থাকা নারীদের ব্যবহৃত পেটিকোটের ভেতরে বিশেষভাবে তৈরি পকেটে পাওয়া যায় ১১ হাজার পিস ইয়াবা।

ডিএনসির এই কর্মকর্তা জানান, ঢাকার প্রবেশমুখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ডিএনসির নজরদারি বেড়ে যাওয়ায় মাদক কারবারিদের আরেকটি চক্র ইয়াবা নিয়ে টেকনাফ থেকে প্রথমে চাঁদপুর যায়। পরে নৌপথে আসে ঢাকায়। বৃহস্পতিবার ওই চক্রের দুই নারী সদস্য চাঁদপুর থেকে লঞ্চে মাদকের চালান নিয়ে সদরঘাটে আসে। সেখানে অভিযান চালিয়ে মোছা. ফাতেমা ও মমিনা বেগমকে ৪ হাজার পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয়। আসামিরা জানায়, তাদের বাড়ি টেকনাফে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি এড়াতে তারা চাঁদপুর হয়ে ঢাকায় আসে। এই পদ্ধতিতে তারা একাধিক ইয়াবার চালান ঢাকায় এনেছে।

এদিকে পর্যটকের ছদ্মবেশে মাদক চোরাচালানে জড়িত ইয়াকুব আলীকে বৃহস্পতিবার বিকেলে মিরপুরের কালশী এলাকা গ্রেপ্তার করেছে ডিএনসি। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সে টেকনাফ, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম থেকে মাদক সংগ্রহ করে ঢাকায় আনে। এ জন্য তার রয়েছে প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল। তার সহযোগীরা প্রাইভেটকারে প্রথমে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা পর্যবেক্ষণ করে। তাদের সবুজ সংকেত পাওয়ার পর মোটরসাইকেলে ইয়াবা নিয়ে ঢাকায় প্রবেশ করে অন্যরা। মোটরসাইকেলে মাদক বহনের সময় সে পর্যটকের বেশ ধারণ করে, যাতে সহজে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দেওয়া যায়। তার কাছ থেকে ২৫ হাজার পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়েছে। অপরদিকে একইদিন সকালে ফার্মগেট এলাকা থেকে নাঈম নামে এক মাদক কারবারিকে ১ হাজার পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করে ডিএনসি।

ডিএনসি উত্তরের উপপরিচালক মো. রাশেদুজ্জামানের তত্ত্বাবধানে এবং সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসানের নেতৃত্বে গুলশান, রমনা, উত্তরা, ধানমন্ডি ও তেজগাঁও সার্কেলের সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ দল এসব অভিযান চালায়। অভিযানে প্রায় ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা দামের ৪১ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ