শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১০:২২ অপরাহ্ন

চরম গরমে মাত্রাছাড়া লোডশেডিং, সামনে সুখবর নেই

প্রতিনিধির / ১৫০ বার
আপডেট : শনিবার, ৩ জুন, ২০২৩
চরম গরমে মাত্রাছাড়া লোডশেডিং, সামনে সুখবর নেই
চরম গরমে মাত্রাছাড়া লোডশেডিং, সামনে সুখবর নেই

জ্যৈষ্ঠের তীব্র গরমে এখন আক্ষরিক অর্থেই হাঁসফাঁস অবস্থা জনজীবনে। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মাত্রাছাড়া লোডশেডিং। এতে মানুষের ভোগান্তি সীমা ছাড়িয়েছে। রাজধানী ঢাকাতেই গত কয়েকদিন ৬-৭ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ মাঝে মাঝে আসে। গরমের মধ্যে বিদ্যুতের এই আসা-যাওয়ায় মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছে। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে বিঘ্নিত হচ্ছে কলকারখানার উৎপাদনও।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, চলতি সপ্তাহে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। ফলে গরম কমারও সম্ভাবনা নেই। এমন পরিস্থিতিতে কয়লা সংকটে দু-একদিনের মধ্যেই পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যেতে পারে। কয়লা আসতে কমপক্ষে ২৫ দিন সময় লাগবে। ফলে দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চলতি মাস প্রায় পুরো সময় বন্ধই থাকবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে দেশে বিদ্যুৎ পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে। অর্থাৎ সামনের দিনগুলোতে লোডশেডিং নিয়ে কোনো সুখবর দিতে পারছে না বিদ্যুৎ বিভাগ।রাজধানীর মুগদার বাসিন্দা তানিম কবির বলেন, গরমের মধ্যে লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণায় টেকা দায়। গত বৃহস্পতিবার রাতে সাড়ে ১১টার দিকে ঘুমাতে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ গেছে, এসেছে দেড়টায়। এভাবে বিদ্যুতের যাওয়া-আসায় গরমে ঠিকমতো ঘুম হচ্ছে না। শিশুরা ভীষণ কষ্টে আছে।

রংপুরের পীরগঞ্জের আসলাম শেখ বলেন, দিনে আট-নয়বার বিদ্যুৎ যায়। প্রতিবার এক থেকে দেড় ঘণ্টা পর আসে। ময়মনসিংহের ভালুকার একটি কারখানার ব্যবস্থাপক রহমত উল্লাহ জানান, লোডশেডিংয়ের কারণে দিনের একটা বড় সময় কারখানা বন্ধ থাকে।এদিকে শুক্রবার রাজধানীর বাজার ঘুরে লোকজনকে চার্জার ফ্যান, এসি কিনতে দেখা গেছে। লোডশেডিংয়ের কারণে জেনারেটর বেশি চালাতে হচ্ছে। এজন্য ডিজেলের বিক্রি বেড়েছে বলে জানিয়েছেন একাধিক পেট্রোল পাম্প মালিক।

দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা এখন ২৩ হাজার ৩৭০ মেগাওয়াট। কিন্তু জ্বালানি সংকটে পড়ে বর্তমানে সাড়ে ৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হচ্ছে। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রাখায় গড়ে দুই থেকে আড়াই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হয়। বাকি ১৭ হাজার মেগাওয়াট সক্ষমতার মধ্যে গড়ে উৎপাদন হয় সাড়ে ১৩ হাজার মেগাওয়াট। কিন্তু চাহিদা থাকে গড়ে সাড়ে ১৫ হাজার মেগাওয়াট। মূলত ডলার সংকটে গ্যাস, কয়লা ও জ্বালানি তেল আমদানি বিঘ্নিত হওয়ায় চাহিদা অনুসারে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না।সূত্র জানায়, কয়লা সংকটে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট গত ২৫ মে বন্ধ করা হয়েছে। আরেকটি ইউনিট থেকে প্রতিদিনই উৎপাদন কমছে। এই ইউনিটটি দু-এক দিনের মধ্যে বন্ধ হতে পারে। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদন অন্তত ৫০০ মেগাওয়াট কমবে। এতে লোডশেডিং আরও মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিদ্যুৎ বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা।

ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির এমডি বিকাশ দেওয়ান বলেন, গরমে কারণে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে। চাহিদার চেয়ে কম বিদ্যুৎ পাওয়ায় কিছু এলাকায় লোডশেডিং করতে হয়। এ ছাড়া গরমের কারণে যন্ত্রপাতি রক্ষায় অনেক স্থানে সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ রাখা হয় বিদ্যুৎ সরবরাহ।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ